
থানা ভাঙচুর ও পুলিশের অস্ত্র লুট মামলায় সিলেট মেট্টোপলিটনের শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেছেন শাহপরান থানার এসআই কামরুল হাসান। সিলেট মেট্টোপলিটনের শাহপরান থানায় ১৩ আগষ্ট ৬১ জনকে আসামী করে এ মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নং ৬৭)। মামলার আসামীরা আওয়ামীলীগ কর্মী ও সদস্য হিসাবে এলাকায় বেশ পরিচয় ও সুনাম রয়েছে।
ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সমর্থিত আসামীগণ সিলেট নগরীতে ভয়ংকর তান্ডব চালিয়েছে এবং ব্যাপক লুটপাট ও ভাংচুর করেছে। মামলার এজহার ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন অফিসে ব্যাপক অরাজকতা চালানো হয় স্থানীয় আওয়ামীলীগ কর্মী সমর্থকদের মাধ্যমে। আওয়ামীলীগ নেতাদের এমন তান্ডবে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়। আওয়ামীলীগ নেতাদের ভয়ে পুলিশও থানা থেকে পালিয়ে যায় এবং সাধারণ মানুষও রাস্তা ঘাটে বের হয়নি। এই সুযোগে ৭ আগষ্ট আসামীগণ সিলেট মেট্রোপলিটন শাহপরান থানায় পুলিশের গাড়ী সহ থানায় ভাংচুর করে অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায়। তখন থানায় পুলিশ সদস্য না থাকায় আসামীগণ ব্যাপক ভাংচুর ও অস্ত্র এবং খাতা লুটপাট করে।
মামলায় আসামীগণ হলেন, ১, রাহেল সিরাজ রাহী ২, আদনান আহমদ ৩, এহিয়া রাজা ৪, মুহিবুর রহমান ৫, রায়হান আহমদ ৬, মিন্টু চন্দ্র দেব ৭, আসাদুজ্জামান রনি ৮, কপিল আহমদ ৯, তারেক আহমদ ১০, রাজু আহমদ ১১, ইকবাল হোসেন ১২, আব্দুর রকিব ১৩, গিয়াস উদ্দিন ১৪, লিয়াকত আলী ১৫, জয়ন্ত দেব ১৬, সজল কুমার নাথ ১৭, পারভেজ রশীদ ১৮, জামাল হোসেন ১৯, হুমায়ূন ২০, শিহাব আহমদ ২১, সুহেল মিয়া ২২, জাবেদ আহমদ ২৩, এস, এম শাইস্তা ২৪, আলী আসগর ২৫, দিলোয়ার হোসেন, ২৬, আব্দুল কাইয়ুম ২৭, সেবুল মিয়া ২৮, সিরাজ মিয়া ২৯, আব্দুল হক ৩০, জাকারিয়া হোসেন ৩১, সুজাত আলী রফিক ৩২, কছির মিয়া ৩৩, পিযুস কান্তি ধর ৩৪, খালেদ আহমদ ৩৫, সাজু মিয়া ৩৬, মির্জা সাকিল ৩৭, আবেদ মিয়া ৩৮, আব্দুল মান্নান ৩৯, সোনাইম হোসেন ৪০, বাবুল মিয়া ৪১, ইরন মিয়া, ৪২, সামছুল হক ৪৩, মাহদী হাসান ৪৪, শাহনুর রশীদ ৪৫, দুলাল আহমদ ৪৬, এমদাদুর রহমান ৪৭, অসিত পাল ৪৮, সেলিম আহমদ ৪৯, তানভীর চৌধুরী ৫০, বুলবুল আহমদ ৫১, শরীফ উদ্দিন ৫২, লিটন মিয়া ৫৩, নাইম হোসেন ৫৪, রুকন আহমদ ৫৫, আবুল কালাম ৫৬, হারান চন্দ্র দাস ৫৭, শামীম আহমদ, ৫৮, রিয়ান আহমদ ৫৯, এম, রাব্বী চৌধুরী ৬০, কপিল আহমদ ও ৬১, শাহ ফরিদ মিয়া।
এ বিষয়ে শাহপরান থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, থানার সকল অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। থানা ভাঙচুর ও অস্ত্র লুটের সাথে যারাই জড়িত আছেন কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে না। নিউজটাইমবিডি রিপোর্টটি সংগ্রহ করার সময় এবং মামলার নথী সম্পর্কে অবগত হয়ে আসামীদের তথা হেবি ওয়েট আওয়ামীলীগ কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় অধিকাংশের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আওয়ামীলীগ কর্মী জানিয়েছেন, "এসব মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণিত অভিযোগের মাধ্যমে আওয়ামীলীগকে কোনঠাসা করার একটি চক্রান্ত চলছে। আওয়ামীলীগ নেত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর নেতা কর্মীরা আত্ন-গোপনে রয়েছেন এবং প্রাণ ভয়ে অধিকাংশ কর্মী-সমর্থক সীমান্ত পথে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাই এই ঘটনায় কোনভাবেই আওয়ামীলীগ কর্মীরা জড়িত নয়।"
তাছাড়াও স্থায়ীয় লোকদের সাথে আলাপ করা হলে নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা ছিল এবং তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসাবে মনে হয়েছে।